লিয়াকত হোসেন লিংকন , কাশিয়ানী
শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ৫০নং ফুকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। পর্যাপ্ত কক্ষ না থাকায় গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার ৮৫ বছর পেরিয়ে গেলেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। দোচালা টিনের ঘরে গাদাগাদি করে চলছে পাঠদান।
জানা গেছে, ১৯৪০ সালে ঐতিহ্যবাহী ফুকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। তিন ও দুই কক্ষবিশিষ্ট দুটি ভবনে চলছিল বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। তিন কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০২৪ সালে নিলামের মাধ্যমে ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। দুই কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি থাকলেও, সেখানে একটি কক্ষে চলছে দাপ্তরিক কাজ। অন্যটিতে চলছে পাঠদান। একটি কক্ষে সংকুলান না হওয়ায় দোচালা একটি টিনের ঘর তুলে সেখানে পাঠদান করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২১৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি মাত্র শ্রেণিকক্ষ। এতে সংকুলান না হওয়ায় পাশে টিনের একটি দোচালা ঘর তোলা হয়েছে। ঘরের মাঝখানে বেড়া দিয়ে দুটি কক্ষ বানানো হয়েছে। প্রচন্ড গরমে সেখানে দুই শিফটে চলছে ক্লাস ও পরীক্ষা। জায়গার সংকুলান না হওয়ায় দুজনের বেঞ্চে বসতে হচ্ছে চারজন শিক্ষার্থীকে। শব্দের কারণে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। রোদ-বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী নুসরাত খানম, আরাফাত ও চৌধুরী ইব্রাহিম জানান, শ্রেণিকক্ষ কম থাকায় গাদাগাদি করে বসে ক্লাস করতে হয়। ক্লাসে একটু দেরি করে এলে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। দুজনের বেঞ্চে গাদাগাদি করে চারজনকে বসতে হয়। পাশের কক্ষের চেঁচামেচিতে পড়া ঠিকমতো বোঝা যায় না।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রুবেল হোসেন বলেন, ‘পুরানো ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে শ্রেণিকক্ষ সংকট দেখা দিয়েছে। টিনের দোচালা ঘর তুলে সেখানে পাঠদান করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে। বৃষ্টির সময় টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। রোদের সময় টিনের চালা গরম হয়ে যায়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের খুবই কষ্ট হয়। এতে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত একটি ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার সরকার জানান, ‘শ্রেণিকক্ষ সংকট সমাধানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে।’